BusinessTech

অল্প বয়সে বেশি টাকা ইনকামের উপায় সমূহ

নিজের একটি ব্যবসা দাড় করানো সবারই স্বপ্ন বা সুপ্ত ইচ্ছা, পর্যাপ্ত ইনভেস্ট বা ক্যাপিট্যাল ছাড়া যা একপ্রকার অসম্ভব। আমাদের জীবনে ছোটবেলা থেকেই শেখানো হয় যে, পরিশ্রম করো ধনী হতে পারবা,তবে কিভাবে পরিশ্রম করবো সেটা না বলে শেখায় পড়ালেখা করে যে গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে। আর যখন বড় হয়ে যাই তখন এই কথাগুলোর উত্তর আমরা কি পেলাম!

যাস্ট ফাঁকা বুলি……

হ্যা পড়ালেখা শেষে অনেকেই ভালো বেতনের চাকরি পাচ্ছে দেশ-বিদেশে। তবে সেই পারসেন্টিজ টা যে বড্ড নগন্য তা সবাই জানে। তাই যতদ্রুত নিজের ইনকাম সোর্স চিনতে পারবেন ততই মঙ্গল।

শিক্ষা জীবন থেকেই শুরু করা যেতে পারে বেশকিছু  ব্যবসা। কিন্তু, বেশিরভাগ ছাত্ররা ব্যবসার স্বপ্নটি পুরো করতে পারেনা কম পুঁজির সমস্যার জন্য। আর তাই, আমি আপনাদের এমন কিছু ইনকাম সোর্সের ব্যাপারে বলবো যেগুলি আপনি অনেক কম খরচে আপনার হাতে যা টাকা আছে তা দিয়েই শুরু করতে পারবেন।

চলুন এখন সময় নষ্ট না করে কম বয়সে বেশি টাকা ইনকাম করার সুবিধা কি হতে পারে এবং কিভাবে স্মার্টভাবে ইনকাম জেনারেট করা যায় সেসব আইডিয়া বা ব্যবসার উপায় জেনে নেওয়া যাক।

 নিজের সফলতার মঞ্চ প্রস্তুতে হতে হবে নিজেকেই উদ্যমী, অন্যরা যেখানে বয়সের ঘর ত্রিশে গিয়ে কিছু করার কথা ভেবে জীবন-যৌবন এক করে ফেলছে সেখানে একবিংশ শতাব্দীতে জন্ম নিয়ে আপনি এতো দেরীতে শুরু করবেন কেন? কম বয়সে শুরু করলে আপনার লাভ কোথায় চলুন জেনে আসি….. 

  • পরিণত বয়সে মানি সোর্সিং হবে অনেক ইজি।
  • আপনার বয়সী সবাই যখন অভিজ্ঞতা অর্জনে ধারে ধারে ঘুরবে আপনি তখন নিজেই অভিজ্ঞ।
  • টিনেজ থেকে পরিশ্রমী হলে ভবিষ্যতের পথটা হবে অত্যন্ত মসৃণ । 
  • তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে অল্প বয়সেই বিস্তর জ্ঞান লাভ করে আপনার ইনকামের পথ সুগম করতে পারবেন। 
  • স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকা যায়।
  • অলস মস্তিষ্কে শয়তানের বাসা আর যুবক বয়সে তা রীতিমতো আঁকড়ায় পরিণত হয়। এখন সিদ্ধান্ত আপনার, মেধাকে কাজে লাগাবেন নাকি শয়তানের আঁকড়া করবেন।

আরে ভাই এখনোতো কলেজ-ভার্সিটির গন্ডিই পেরোলাম না, আমি কিভাবে ইনকাম করবো!😒

বিশ্বের দিকে একটু খোঁজার চোখ দিয়ে তাকিয়ে অনুধাবন করার চেষ্টা করুন কত বছর বয়সে শুরু করলে আক্ষরিক অর্থেই আপনি জীবন যুদ্ধে এগিয়ে যেতে পারবেন…..

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ইনকামের শুরুটা ১৮-১৯ বছর বয়সে শুরু হলে প্রতিযোগিতার বাজার অনেক আগেই চেনা হয়ে যায় তাই ত্রিশ বা চল্লিশের বছরে পদার্পন করে যেকোনো ব্যবসায়ীক চ্যালেঞ্জ নিতে আগে থেকে প্রস্তুতও থাকা যায়। যেহেতু আপনার শুরুটা অাগে হয়েছে তাই অভিজ্ঞতায়ও অল্প বয়সে অনেক সিনিয়রকে টেক্কা দেওয়া কোনো ব্যাপারই হবেনা।

আচ্ছা যে টাকা আমাদের কাছে আসে সেটাই কি ইনকাম? না বন্ধুরা, এই ভুল ধারণা আমাদের কে বাদ দিতে হবে। টাকা আমাদের কাছে অনেক ভাবেই আসতে পারে। কিন্তু সব টাকাই ইনকাম নয়। যেমন ব্যাংক থেকে লোন নিলে টাকা আসবে তবে সেটা ইনকাম নয়।

তাই যখন কোন টাকা নির্দিষ্ট মাত্রায় সময়ের অন্তরালে আমরা কোনো কর্ম অথবা সেবার বিনিময়ে পাই তাকেই ইনকাম বলতে পারি, তো আপনি কি ইনকাম সেই কবে হবে, কিভাবে হবে তার জন্য বসে থাকবেন?

এটা চাকরি থেকে পেতে থাকা টাকা হতে পারে। ব্যবসা থেকে পাওয়া লভ্যাংশ হতে পারে। তাই জীবনে স্মার্টভাবে হালাল ভাবে ধনী হওয়ার জন্য আমাদের ইনকামের রূপে টাকা প্রয়োজন।

এখন আমি যে কথাটি বলতে যাচ্ছি তা একটু ভালোভাবে মনোযোগের সাথে খেয়াল করুন।পৃথিবীতে বেশিরভাগ মানুষই ধনী হতে পারে না কারণ সে টাকা এবং ইনকাম এর মধ্যে পার্থক্য না বুঝেই শুধু বেশি টাকার জন্য কাজ করে। বিপরীত দিকে ধনী ব্যাক্তিরা শুধু বেশি টাকার জন্য নয়, বেশি বেশি ইনকাম সোর্স বাড়ানোর জন্য কাজ করে। এটা খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে ধনীরা ইনকামের ব্যাপারে খুব ভালোভাবে বুঝে কেননা ধনী ব্যক্তি সেই হয় যার কাছে বেশি বেশি টাকা নয় বেশি বেশি ইনকাম সোর্স থাকে।

ইনকাম তিন ধরনের হয়।

১/ অ্যাক্টিভ ইনকাম

২/ প্যাসিভ ইনকাম

৩/পোর্টফলিও ইনকাম

১. অ্যাক্টিভ ইনকাম কি?

এই ইনকাম পাওয়ার জন্যে আমাদের সেবা-মেহনত বা সময়ের বদলে যে অর্থ উপার্জন হয় এটা হচ্ছে অ্যাক্টিভ ইনকাম।যেমন চাকরি থেকে বেতন পাওয়া হচ্ছে অ্যাক্টিভ ইনকাম।কেননা এতে আমাদের অ্যাক্টিভ রুপে কাজ করতে হয়। আমরা আমাদের সময় অথবা আমরা যে রূপে সার্ভিস দেই সে হিসেবেই বেতন পাই। কাজ করা বন্ধ তো ইনকাম বন্ধ।

যখন কেউ একমাত্র ইনকামের চাকরি হারায় অথবা চাকরীচ্যুত হয় তখন তার পরিবারের ওপর মনে হয় আকাশ ভেঙে পড়ে।

তাই, কখনো বন্ধুরা কালেভদ্রে একজন মানুষ খুঁজে পাবেন না যে অ্যাক্টিভ ইনকাম করে অনেক ধনী হয়ে গিয়েছে। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই গরিব কারন তারা শুধুমাত্র একটি ইনকাম নিয়েই সন্তুষ্ট তাই ইনকামের অন্য সব উপায় নিয়ে তাদের অবিশ্বাস বড্ড বেশি। তবে ছাত্র বয়সে একটিভ ইনকাম দিয়ে শুরু করাই ভালো, যেমন টিউশনি বা কোচিং ব্যবসা। এখান থেকে ছোট একটা অর্থ যদি জমা করতে পারেন প্যাসিভ ইনকামের জন্য তবে সেটাই হবে আপনার সফলতা। 

২. প্যাসিভ ইনকাম

এই ইনকামের জন্য আমাদের সব সময় কাজ করতে হয় না। উদাহরণস্বরূপ ধরুন আপনি একটি ব্যবসা শুরু করেছেন এবং কিছু সময় পরে আপনি এমন একটি সিস্টেম ডেভলপ করে ছেড়ে দিয়েছেন যা এখন আপনি ছাড়াও চলে এবং যা থেকে আপনি নিয়মিত দিনের ২৪ ঘন্টা সপ্তাহে ৭দিন ইনকামও পেতে থাকেন।

ওয়েবসাইট, গুগোল,,ফেসবুক, ইউটিউব থেকে এডসেন্সের মাধ্যমে যে ইনকাম হয় এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে যা আয় হয় এ সকল ইনকাম কেই প্যাসিভ ইনকাম বলে। এই সকল প্যাসিভ ইনকাম এর জন্য আপনাকে একবারই কাজ করতে হয়, যার লভ্যাংশ লম্বা সময় ধরে পাওয়া যায়। ঠিক এভাবেই এখন অনেক কাজ আছে যা আপনাকে একটি পর্যায় পর্যন্ত করতে হয়, যার লভ্যাংশ আপনি যখন কাজ না করেও পারবেন।

প্যাসিভ ইনকাম এর উপকারিতা হলো জীবনকে উপভোগ করার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ স্বাধীনতা পাবেন আপনি। প্যাসিভ ইনকাম  জেনারেট করতে সব সময় কাজ করতে হয় না আর এজন্যই আপনি যখন আপনার পরিবার নিয়ে ছুটিতে থাকেন অথবা আপনি কোনো অসুস্থতার জন্য ছুটি কাটান তখনো আপনার ইনকাম সচল থাকবে।

দেয়ার ইজ নো ইনকাম লিমিট “যদি”!

যদি আপনার অনলাইন বিজনেসের পণ্যের চাহিদা প্রচুর হয়ে যায়, যেটাকে ভাইরাল বলে আর কি! তাহলে আপনার ইনকামের কোন সীমাবদ্ধতাই থাকবেনা আপনি লিমিট ছাড়া ইনকাম করতে পারবেন। আর এভাবেই আপনি যদি নিজের একটা ব্রান্ড উন্মুক্ত করতে পারেন,  একটা সময় পর সেই ব্রান্ড শুধুমাত্র নামের উপরে চলবে।

৩/ ধনী বানানোর পোর্টফোলিও ইনকাম–

সর্বশেষ যে ইনকাম নিয়ে কথা বলব সেটি হলো পোর্টফোলিও ইনকাম।টাকা দিয়ে টাকা ইনকাম করার যে সিস্টেম তাকেই পোর্টফোলিও ইনকাম বলে।অর্থাৎ আপনি আপনার টাকা ডাইরেক অথবা ইনডাইরেক্ট বিনিয়োগ করে যে ইনকাম জেনারেট করেন সেটা পোর্টফলিও ইনকাম।

উদাহরণস্বরূপ ব্যাংকে টাকা জমা রেখে ফিক্সড ডিপোজিট ইনকাম। এই দুনিয়াতে আপনি তখনই ধনী হবেন যখন আপনি টাকার জন্য নয় বরং টাকা আপনার জন্য কাজ করবে। 

পোর্টফলিও ইনকাম হলো, আপনি টাকা শেয়ার মার্কেটে,মিউচুয়াল ফান্ড অথবা বন্ডে ইনভেস্ট করছেন অথবা প্রাইভেটে কোথাও ইনভেস্ট, কিংবা রিয়েল এস্টেটে খাটাচ্ছেন অর্থাৎ যেখানে আপনি টাকা খাটিয়ে টাকা ইনকাম করছেন। আরেকটি কথা পোর্টফোলিও ইনকাম দিয়েই দুনিয়ার মস্ত বড় ধনী মানুষ বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেটরা ধনী হয়েছেন।

তাই আপনি যদি অল্প বয়সে জীবনে ধনী হতে চান তাহলে ছাত্র বয়স থেকেই একটিভ ইনকামের পাশাপাশি আপনাকে প্যাসিভ ইনকাম এর জন্য কাজ করতে হবে। যদি এটাকে সিরিয়াল হিসেবে ধরে আপনি ছোট ছোট অ্যাক্টিভ ইনকাম দিয়ে শুরু করে প্যাসিভ ইনকামের সিস্টেম ডেভেলপ করে ফেলতে পারেন তখন প্যাসিভ ইনকাম শুরু হয়ে গেলে আপনাকে আর ঠেকায় কে?  প্যাসিভ ইনকাম থেকে যখন কিছু ইনকাম করতে থাকবেন, তখন সে টাকাগুলোকে পোর্টফলিও ইনকামের জন্য কাজে লাগাতে পারেন এবং স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে পারবেন।

সঠিক সময়ে তরুণ বয়সের গায়ে না লাগানো পরিশ্রম দিয়ে এইরকম স্মার্ট পদ্ধতিতে স্টেপ বাই স্টেপ আগাতে পারলেই আপনি হয়ে যেতে পারেন আপনার ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে সবার আগে ওয়েল সেটেল হয়ে যাওয়ার রোল মডেল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button